Pages

শুক্রবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২২

বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় সুপার স্টার ব্রাজিলের ফুটবলার নেইমার ও তার মেয়ে বন্ধদের সংখ্যা

বন্ধুরা কেউ অবাক হবেন না, কারো মাথা ঘুড়ালে আমি দায়ী নই। কেবল জেনে রাখুন যে এই বিশ্বসেরা খেলোয়াড়, বিশ্বকাপানো, বিশ্বের ভক্ত অনুরাগীদের মাথা খারাপ করে দেয়া ফুটবল খেলোয়াড় নেইমার কতবার কত নারীর বিছানা গরম করেছে এবং তার জীবনে কতজন মিডিয়া পাগল করা সুন্দরী নায়িকা মডেল নেইমারের জীবনে এসেছে এবং গিয়েছে। মাত্র ২৭ বছর বয়স, আরো সমূখে অনেক গুলো বছর পরে আছে।



যাই হোক কোন সমালোচনা নয় কেবল দক্ষিন এশিয়ার মধ্যে আমরা বাঙ্গালী কৃষ্টি ও সভ্যতার মাঝে বেড়ে উঠেছি বলেই আমাদের নিকট খারাপ লাগতে পারে, তবে ব্রাজিলের মত ফ্রি সেক্সের দেশে এটা কোন বড় ধরনের কোন ঘটনা নয়।

চলুন জেনে নেই নেইমারের জীবনে আসা সে ২০ জন নারীর নাম ও পরিচয়।

১। ক্যারোলিনা দান্তাস একজন ব্রাজিলিয়ান সোশ্যাল মিডিয়া সেনসেশন নেইমার ক্যারোলিনার সাথে 2010 সালে সম্পর্ক গড়ে তোলে । ক্যারলিনাই নেইমারের জীবনে প্রথম গার্ল ফ্রেন্ড । হয়তো এর বাইরে আমরা কিছুই জানিনা।  সেই সময় নেইমারের বয়স ছিল মাত্র 18 বছর তবে এই সব কিছুর মধ্যেই ক্যারোলিনা এবং নেইমারের বেশ গুরুতর রোম্যান্স ছিল পরে ক্যারোলিনা নেইমারের ছেলের জন্ম দেয় যার নাম ছিল ডেভিড লুকা দুর্ভাগ্যবশত ডেটিং করার মাত্র নয় মাস পরে তাদের ব্রেক আপ হয় তবে তারা বর্তমানে ভাল শর্তে রয়ে গেছে। তারা ছেলে ডেভিডের সহ-বাস্তবতা করছে।   

২। বারবারা ইভান্স একজন ব্রাজিলিয়ান মডেল এবং অভিনেত্রী নেইমার ক্যারোলিনার সাথে বিচ্ছেদের পর বারবারার সাথে একটি ছোট সম্পর্ক ছিল। তবে তাদের রোম্যান্স দীর্ঘস্থায়ী হয়নি মাত্র কয়েক মাস ডেটিং করার পরে তারা আলাদা হয়ে যায় ।

৩। নিকোল বল হলেন একজন ব্রাজিলিয়ান মডেল এবং টিভি উপস্থাপক নেইমার 2011 সালের মে মাসে নিকোলের সাথে একটি সংক্ষিপ্ত ফ্লাইং করেছিলেন। প্রাথমিকভাবে তারা তাদের সম্পর্ক লুকানোর চেষ্টা করেছিল তবে একটি সাক্ষাত্কারে তাদের ডেটিং গুজব সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি নেইমারের সাথে ডেটিং করার কথা স্বীকার করেছিলেন। দুর্ভাগ্যক্রমে তাদের রোম্যান্স কয়েক মাস স্থায়ী হয়েছিল।

৪। ড্যানিয়েলা কারভালহো হলেন একজন সোশ্যাল মিডিয়া আইকন যিনি ব্রাজিলে জন্মগ্রহণ করেছিলেন নেইমার, ড্যানিয়েলার সাথে 2011 সালের আগস্টে মাসে প্রথম সম্পর্ক স্থাপিত হয়।

দুর্ভাগ্যবশত তাদের সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়নি মাত্র দুই মাস ডেটিং করার পরে তারা ভেঙে যায় এবং তাদের আলাদা আলাদা হয়ে যায়।

৫। আন্দ্রেসা সুয়েতা একজন ব্রাজিলিয়ান মডেল এবং অভিনেত্রী নেইমার আন্দ্রেসা সুয়েতার সাথে 2011 সালের নভেম্বরে একটি স্বল্প সময়ের জন্য সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন।

তাকে নেইমারের সাথে স্বল্পকালীন সময় দেখা গিয়েছিলো পরে তাদের একটি নাইট ক্লাবে একসঙ্গে দেখা যায় সাউ পাওলোতে। দুর্ভাগ্যবশত কিছু তারিখের পরেই সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটে । 

৬। কেরালা ব্রাঞ্ছেস একজন ব্রাজিলিয়ান মডেল এবং নৃত্যশিল্পী নেইমার এবং ক্যারলের ২০১১ সালে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং সে সম্পর্কও বেশী টিকেনি। প্রথমদিকে কেরল ব্রাঞ্ছের সাথে সম্পর্কের কথা গোপন থাকলেও পরবর্তীতে জানাজানি হয়ে যায়।

৭। মাইরা কার্ডি ব্রাজিলের একজন ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক, 2012 সালে মাইরা কার্ডির সাথে নেইমারের একটি ছোট সম্পর্ক ছিল। দুর্ভাগ্যবশত তাদের সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। যাইহোক তারা একটি চমত্কার সুন্দর দম্পতি ছিল.

৮। রবার্টা প্রট্টি ছিলেন ব্রাজিলের টেলিভিশন শোতে নৃত্যশিল্পী। তিনি ব্রাজিলের সাও পাওলোতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। ২০১২ সালের এপ্রিলে এই নৃত্যশিল্পীর সঙ্গে সম্পর্ক হয় নেইমারের। দুর্ভাগ্যবশত কিছু তারিখের পরেই ভেঙ্গে গেল এবং তাদের আলাদা উপায়ে চলে গেল।

৯। ক্যারল বেলি, ব্রাজিলিয়ান মডেল এবং অভিনেত্রী। ক্যারল বেলির সঙ্গে নেইমারের সম্পর্ক ছিল। তারা 2012 সালে কয়েকবার একসঙ্গে ছিল। অনেক প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে তাদের একসঙ্গে দেখা গেছে। তারা কয়েক মাস একসাথে ছিল এবং খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তাদের বিচ্ছেদ ঘটে

১০। অনিতা একজন ব্রাজিলিয়ান গায়িকা এবং গানের লেখক। বিলবোর্ড দ্বারা তিনি সবচেয়ে প্রভাবশালী সেলিব্রেটিদের মধ্যে একজন হিসেবে স্থান পেয়েছেন। নেইমার 2013 সালে অনিতার সাথে ডেটিং করছেন বলে গুজব ছিল। অনিতা এবং নেইমার তাদের প্রথম দেখা হওয়ার পর পরস্পর বন্ধুর মাধ্যমে একে অপরের সাথে দেখা করেছিলেন এবং শীঘ্রই তারা আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং শীঘ্রই তারা রোম্যান্স করতে শুরু করেছিলেন যখন নেইমারকে তার কয়েকটি পার্টিতে যোগ দিতে দেখা গিয়েছিল। পরে ব্রাজিলের বিখ্যাত ইভেন্টে তাদের একসঙ্গে চুম্বন ও আলিঙ্গন করতে দেখা গেছে। নেইমারের নতুন বান্ধবীকে দেখে খুশি ভক্তরা। তাছাড়া এই সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।

১১। পেট্রিসিয়া জর্ডান একজন পর্ণ শিল্পী। এই ব্রাজিলিয়ান প্লেবয় মডেল ও অভিনেত্রীর সাথেও নেইমারের রোমান্স লাভ এবং শারিরীক সম্পর্কে স্থাপিত হয়েছিল।

২০১৩ সালে নেইমারের সাথে পেত্রিসিয়ার প্রেম ও ডেটিং হয়। নেইমার পেট্রিসিয়ার সাথে প্রেম ও ডেটিং্যের বিষয়টি অস্বীকার করে ভক্তদের নিকট। এবং এতদ বিষয়ে নেইমার ব্রাজিলিয়ান আদালতে আপীল করেন পেট্রিসিয়ার সাথে সম্পর্কের দুর্নাম ঘুচানোর জন্য।

১২। ব্রুনো মারকুইজিন একজন ব্রাজিলিয়ান নামী দামী সুন্দরী অভিনেত্রী। এই নায়িকা ব্রাজিলিয়ান চলচ্চিত্রে শিশুকাল থেকে অভিনয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থার বিজ্ঞাপনে মডেলিং করে আসছে। নেইমার সুদীর্ঘ সময় ব্রুনোর সাথে সহবাস যাকে লীভ টুগেদার বলা হয় এবং সুদীর্ঘ পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের মধ্যে মধুর সম্পর্ক এবং সহবাসের রেকর্ড ছিল। শুধু তাই নয়, এটাই ছিল নেইমারের জীবনে সব চেয়ে বেশী বছর ভালোবাসার সম্পর্ক দীরঘায়িত করার রেকর্ড । 


আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এই ব্রুনো এবং নেইমার প্রসঙ্গে। তাহলো নেইমার এবং ব্রুনোর সম্পর্কচ্ছেদ ঘটে এবং পরবর্তীতে তারা উভয়েই অনুভব করে যে তারা উভয়কে উভয়ই গভীরভবে ভালোবাসে। তাই দুই দুইবার বিচ্ছেদ ঘটার পরেও আবার তারা সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং ব্রাজিল বিশ্বকাপেও নেইমারের সাথে ব্রুনোকে দেখা যায় এবং একজন অপরজনকে চুম্মন করতেও দেখা যায়।  দেখা গিয়েছিল। তবে সে সম্পর্কও আর টিকেনি। এ ব্যাপারে মিডিয়াতেও অনেক লেখা লেখি হয়েছে, তবে এটি একটি রাজনৈতিক চাল ছিল বলে বিশেষজ্ঞগণ পত্র পত্রিকায় মন্তব্য করেছেন। এর অন্তরালের আসল কারন হচ্ছে ব্রুনো এবং নেইমার রাজনৈতিকভাবে বিরোধীদলের সমর্থক যে কারনে বিষয়টি রাজনৈতিকভাবেই এত সমালোচিত হয়েছিল। চূড়ান্তভাবে নেইমার তার রাজনৈতিক মতবাদ পরিবর্তনের বিষয়ে কঠোর মনোভাব পোষন করে এবং চূড়ান্তভাবে ব্রুনোর সাথে সম্পর্কচ্ছে ঘটে।

নেইমারের ভক্তদের মাঝে দারুন প্রভাব ফেলেছিলো তাদের সম্পরকচ্ছেদের সংবাদ প্রকাশের পর।

১৩। লেরিসা ওলিভাইরা একজন সোস্যাল মিডিয়া সেলিব্রেটি এবং ফ্রীস্টাইল সাতারু।  ২০১৩ সালে নেইমারের সাথে সম্পর্ক স্থাপিত হয় এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে সম্পর্ক মাত্র ১ বছরের মাথায় ছেদ হয়।

 ১৪। গেবরিয়েলা লিন্সে একজন ব্রাজিলিয়ান নামকরা মডেল। নেইমার গেবরিয়েলার সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং গেবরিয়েলা নেইমারের সাথে দৈহিক সম্পর্কের কথা তার ইন্সটগ্রামে অনেক ছবি পোষ্ট দিয়ে অস্বীকার করে এবং কেবল বন্ধুত্ব সম্পর্ক বলেই প্রচার করে।

১৫। এলেসান্ড্রা এলেসিও একজন ব্রাজিলিয়ান ও আমেরিকান অভিনেত্রী এবং মডেল। নেইমার এলেসান্ড্রার সাথেও সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং সেটিও বেশী দিন স্থায়ী হয়নি।

১৬। সারাজা ভুসেলেক সারভিয়ার একজন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং মডেল। নেইমার সারার সাথেও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং মাত্র কয়েক মাস পরেই সারাজা ভুসেলেকের সাথে সম্পরকচ্ছেদ ঘটে।

১৭। তাইলা আয়ালা একজন ব্রাজিলিয়ান মডেল এবং নামী দামী চলচ্চিত্র ও টিভি নায়িকা। ২০১৫ সালে নেইমারে সাথে সম্পর্ক স্থাপিত হয় এবং তাও মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে বিচ্ছিন্ন হয়।

১৮। জেনি এন্ড্রেড একজন ব্রাজিলিয়ান এবং বিশ্ব বিখ্যাত সেক্সি মডেল যার নাম বিশ্বের সেক্সি মডেল কন্যাদের মধ্যে ১০০ তম স্থানে ।

নেইমার এই বিশ্ববিখ্যাত ১০০ তম অবস্থানের জেনি এন্ড্রেডের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সম্পরকচ্ছেদ ঘটে।

১৯। নাতালিয়া বারুলিচ একজন আমেরিকান মডেল এবং অভিনেত্রী । নাতালিয়ার জন্ম ক্যালিফোর্নিয়ায় । নেইমার প্রথম দেখাতেই নাতালিয়ার প্রেমে পড়ে এবং ডেটিং করে। ঠিক সে সময়েই নাতালিয়া অন্য একজনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে বলে জানায় এবং ২০২০ সালে নাতালিয়ার সাথে সম্পরকচ্ছেদ হয় নেইমারের।

২০ এমিলিয়া মারনেস একজন আরজেন্টিনো গান লেখিকা ও নামি দামী শিল্পী । নেইমার অবশ্য এ সম্পর্কের কথা অস্বীকার করেছে মিডিয়ার নিকট।

 

 

 

বৃহস্পতিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২২

যেসব কারণে আপনার নিয়মিত বই পড়া উচিত এম এইচ আবরার

 

যেসব কারণে আপনার নিয়মিত বই পড়া উচিত 

এম এইচ আবরার

আমাদের অনেকেরই বই পড়ার প্রবণতা না থাকলেও সবারই যে বাধ্য হয়ে পাঠ্যবই পড়া লাগে তা বলাই বাহুল্য। সেই হিসেবে বলা যায়- আমরা সবাই বই পড়ি, তবে সেই বই পড়া যে আমাদের কতটা আনন্দ দিয়ে থাকে সেটাই প্রশ্ন! কেননা, বই পড়ার কারণে প্রধান যে প্রভাব আমাদের মনে পড়া উচিৎ তা হচ্ছেআনন্দঅনুভব করা। আর, আমার মনে হয় না যে জোর করে পাঠ্যবই পড়ে কেউ সেই আনন্দ অনুভব করে। উল্টো যারা পাঠ্যবইয়ের বাইরে উপন্যাস বা প্রবন্ধের বই পড়ে, তাদের অনেককেই পড়ালেখায়অমনোযোগীআখ্যা দেওয়া হয়। আবার, অনেক সময় বইপোকাদের কেউ বই পড়তে দেখলে প্রশ্ন করে বসে, “এসব বই পড়ে লাভ কী?তখন অনেকেই আমরা যথাযথ উত্তর দিতে পারি না, কেননা অনেকেই বই পড়ে কেবলমাত্র আনন্দের জন্য। সেক্ষেত্রে যদি এই উত্তর দেয়া হয়, তাহলে বোঝাই যায় যে প্রশ্নকর্তা হেসেই উড়িয়ে দেবে। আবার, অনেক ক্ষেত্রে আমাদের আপন মনেই প্রশ্ন জাগে যে, বই পড়লে ঠিক কী কী বিষয়ে আমরা লাভবান হই? অথবা, বই পড়ার সঠিক অর্থে কী কী উপকারিতা রয়েছে? আশা করা যায় এই লেখাটি পড়ে আপনি এই ব্যাপারে চমৎকার একটি ধারণা পেয়ে যাবেন।

আপনার মস্তিষ্কের উন্নতিসাধন করে

২০১৫ সালে পরিচালিত এক গবেষণায় এমআরআই স্ক্যানের মাধ্যমে দেখা যায়- বই পড়ার সময় মস্তিষ্কের খুব জটিল নিউরাল নেটওয়ার্ক এবং সিগনাল সক্রিয় থাকে। আর যতই আপনার বই পড়া বৃদ্ধি পায়, ততই সেই তা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ২০১৩ সালে করা আরেকটি গবেষণায় ফাংশনাল এমআরআই স্ক্যান ব্যবহার করে একটি উপন্যাস পড়ার সময় মস্তিষ্কে কী রকম প্রভাব পড়ে সেটা পর্যবেক্ষণ করা হয়। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ২১ জনকে দিনপম্পেইউপন্যাস পড়তে দেয়া হয়। সেই উপন্যাস পড়াকালে যখন উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে থাকে, তখন মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ অতিমাত্রায় সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই গবেষণায় দেখা যায়, এই দিনের বই পড়ার পরের সময়ে অংশগ্রহণকারীদের মস্তিষ্কের কানেক্টিভিটি বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষ করে Somatosensory Cortex অংশে, যে অংশের কাজ শারীরিক সংবেদনশীলতার প্রতি সাড়া দেয়া।

আপনার সহানুভূতিশীলতা বৃদ্ধি করে

গবেষণায় দেখা গিয়েছেযেসব ব্যক্তি বিভিন্ন উপন্যাস পড়ে থাকে, বিশেষত, যেসব উপন্যাসের চরিত্রগুলো অভ্যন্তরীণ জীবন অন্বেষণ করে, তাদের অন্যদের তুলনায় পরিস্থিতি উপলব্ধির ক্ষমতা বেশি থাকে। গবেষকরা একে ‘Theory of Mind’ বলেন। এটি একজন মানুষের সামাজিক বন্ধন অটুট রাখতে এবং ভালো অবস্থা বজায় রাখার জন্য অতীব জরুরি। 

যদিও বছরে মাত্র একটি বই পড়লে এসবের কিছুই কারো মধ্যে গড়ে উঠবে না, কিন্তু যদি কেউ নিয়মিত বই পড়ে, তাহলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই সে অন্যদের তুলনায় অধিক বিকশিত একটি মন পাবে।

আপনার শব্দকোষ সমৃদ্ধ করে

১৯৬০ সালে একদল গবেষক একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন, যাকেThe Mathew Effect’ বলা হয়। মূলত এটি একটি বাইবেলের শ্লোককে কেন্দ্র করে গঠিত। এই শ্লোক থেকেইগরীব গরিব হচ্ছে এবং বড়লোকের সম্পদ আরো বাড়ছেপ্রবাদের উদ্ভব ঘটে। এই প্রবাদ যেমন অর্থের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, ঠিক ততটাই একজন মানুষের শব্দকোষের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

‘Matthew effects in young readers: reading comprehension and reading experience aid vocabulary development’ শীর্ষক গবেষণায় দেখা গেছে, যে ছাত্র যত আগে থেকে বই পড়ে আসছে, তার শব্দকোষ ভবিষ্যতে ততই সমৃদ্ধ হয়ে ওঠে। আর একজন ছাত্রের সমৃদ্ধ শব্দকোষ তাকে ছাত্রজীবন এবং কর্মজীবন উভয় ক্ষেত্রেই অনেক সাহায্য করে। ২০১৯ সালেসেনগেজ এর করা এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৬৯% নিয়োগকর্তা এমন আবেদনকারীকে প্রাধান্য দেন, যাদের মানুষের সঙ্গে সুন্দর বাচনভঙ্গিতে এবং গুছিয়ে কথা বলার দক্ষতা রয়েছে। আর আমরা সবাই জানি, এই দক্ষতা অর্জন করতে বই পড়ার থেকে বেশি কার্যকর কিছু আর হয় না।

বার্ধক্যকালীন স্নায়বিক সমস্যা প্রতিরোধ

আমেরিকার ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অন এজিং পরামর্শ দিয়েছে, নিয়মিত বই পড়া একজন মানুষের বার্ধক্যকালীন স্নায়বিক সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে। যদিও গবেষণা সরাসরি এটা দাবি করে না যে নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস স্নায়বিক রোগ (অ্যালঝেইমার্স , ডিমেনশিয়া ইত্যাদি) প্রতিরোধ করে। তবে দেখা গেছে, নিয়মিত বই পড়া এবং জটিল গাণিতিক সমস্যা নিয়ে চর্চাকারীদের স্নায়ু অন্যদের তুলনায় উন্নত অবস্থায় থাকে।

তবে এক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি নিজের জীবনে যত আগে থেকে এই অভ্যাস গড়ে তুলবেন, ততটাই তার জন্য কার্যকরী হবে। ২০১৩ সালেরাস ইউনিভার্সিটি মেডিক্যাল সেন্টার দ্বারা পরিচালিত এক গবেষণায় উঠে আসে- যেসব ব্যক্তি মানসিকভাবে উদ্দীপক কর্মে বেশি সক্রিয়, তাদের মস্তিষ্কে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের তুলনায় টিউমার বা সিস্ট ধরনের কিছু উৎপত্তি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশেই কম।  

মানসিক চাপ হ্রাস করে

২০০৯ সালে পরিচালিত এক পরীক্ষায় কয়েকজন ছাত্রকে যোগব্যায়াম, হাস্যরস এবং বই পড়া মানসিক চাপের উপর কেমন প্রভাব ফেলছে তা দেখা হয়। সেই পরীক্ষায় উঠে আসে যে, ৩০ মিনিটের বই পড়া রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন ইত্যাদি স্বাভাবিক রাখতে যোগব্যায়াম এবং হাস্যরসের মতোই কার্যকর প্রমাণিত হয়। এই পরীক্ষার সাথে জড়িত একজন গবেষক বলেন,

যেহেতু স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের ছাত্রদের দেয়া রিপোর্ট অনুযায়ী তাদের মানসিক চাপের কারণগুলোর মধ্যে সময়ের সীমাবদ্ধতা একটি, তাই এই পদ্ধতির মধ্যে যেকোনো একটি ৩০ মিনিটের জন্য তাদের দৈনন্দিন কর্মের সাথে যুক্ত হলে তাদের পড়ালেখার সময় নষ্ট হবে না।

পর্যাপ্ত ঘুমে সাহায্য করে

মায়ো ক্লিনিকে পরামর্শ, রাতে পর্যাপ্ত ঘুমের জন্য বই পড়া খুব কার্যকর একটি পন্থা। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু দিকে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। যেমন- আপনি যদি বই সাধারণত পিডিএফ আকারে পড়েন, তাহলে আপনার একটি -বুক রিডারের মাধ্যমে বই পড়া উচিত। কেননা, রাতে আপনি যদি স্মার্টফোনের মাধ্যমে বই পড়েন, তাহলে মোবাইলের ব্লু-লাইট আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে। তবে, আপনি যদি কাগজের বই পড়েন, তাহলেও আপনার উচিৎ হবে খাটে বসে বই না পড়া। অন্য কোথাও গিয়ে বই পড়তে থাকবেন, যখন ঘুম ঘুম ভাব আসবে তখন খাটে গিয়ে ঘুমিয়ে যাবেন।

বিষণ্নতার উপসর্গ উপশম করতে সাহায্য করে

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিষণ্নতায় ভুগতে থাকা মানুষরা অন্যদের থেকে নিজেদের ভিন্ন এবং বিচ্ছিন্ন বোধ করেন। এই খারাপ অনুভূতিগুলো বই পড়ার মাধ্যমে হ্রাস করা সম্ভব।

সাহিত্যপাঠ আপনাকে সাময়িকভাবে বিষণ্ন বাস্তবজীবন থেকে পালিয়ে থাকতে সাহায্য করে, এবং আপনাকে সুযোগ করে দেয় যেন আপনি কাল্পনিক চরিত্রের জীবনের অভিজ্ঞতা অনুভব করতে পারেন। আর এরই সাথে নন-ফিকশন (প্রকৃত তথ্যভিত্তিক সাহিত্য) সাহায্য করে আত্মোন্নয়ন ঘটাতে এবং নিজের জীবনের বিষণ্নতা কাটিয়ে ওঠা শিখতে।

বিষণ্নতার উপসর্গ উপশম করতে সাহায্য করে; Photo: Andrea Piacquadio

আর এজন্যই যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস রিডিং ওয়েল নামক একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে, যেখানে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন মানুষের মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে তাদের সেই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে কার্যকর বই পড়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। কেননা, বই পড়ার উপকারিতার মধ্যে বিষণ্নতা কাটানো অন্যতম।

দীর্ঘায়ু প্রাপ্তিতে সাহায্য করে
,৬৩৫ জন প্রাপ্তবয়স্ককে নিয়ে একটি ১২ বছর দীর্ঘ গবেষণা করা হয়, যেখানে উঠে আসে- যেসব ব্যক্তির বই পড়ার অভ্যাস রয়েছে, তাদের বই পড়ায় অভ্যস্ত নয় এমন ব্যক্তিদের তুলনায় বছর বেশি আয়ু ছিল।
এই একবিংশ শতাব্দীতে প্রযুক্তিগত বিপ্লবের ফলে বই পড়ার অভ্যাস অনেকের মাঝে প্রায় উঠেই গিয়েছে বলা চলে। তবে, বই পড়ার চেয়ে সুখকর নির্মল আনন্দ যে হয় না, সেটা যারা বই পড়ে তারা অবশ্যই মানতে বাধ্য। বই পড়ার মাধ্যমে যেমন বিনোদন নেয়া যায়, সেই সাথে জ্ঞান আহরণও করা যায়। এজন্যই, যাদের বই পড়ার অভ্যস এখনও গড়ে ওঠেনি, তাদের সবারই উচিৎ এই সুন্দর অভ্যাস গড়ে তোলা।